শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

 ছোটবেলার ঈদে হৃদয় ছোঁয়া আনন্দ ছিল : এড.আওলাদ 

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ঈদ এমন এক নির্মল আনন্দের আয়োজন, যেখানে মানুষ আত্মশুদ্ধির আনন্দে পরস্পরের মেলবন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং আনন্দ সমভাগাভাগি করে। মাহে রমজানের এক মাসের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজেদের অতীত জীবনের সব পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত হতে পারার পবিত্র অনুভূতি ধারণ করেই পরিপূর্ণতা লাভ করে ঈদের খুশি। আর এ খুশিকে যুগের চিন্তা পরিবারের ২৪’র পরিবারের সাথে ভাগ করে নিতে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন ন্যাপ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এড.আওলাদ হোসেন । সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন রাসেল আদিত্য।  

 

ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়ে এড.আওলাদ হোসেন বলেন, বরাবরের মতো সাধারণত নারায়ণগঞ্জেই ঈদ কাটাবো। ঈদের দিন কীভাবে কটাবেন বলে পরিকল্পনা করেছেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এড. আওলাদ হোসেন বলেন, সকালে নামাজের পর বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করি। তারপর বন্ধু-বান্ধবের সাথে ফোনে যোগাযোগ করি। সাধারণত সারাদিন বাসায়ই থাকি। 

 

ঈদের কেনাকাটার বিষয়ে এড.আওলাদ হোসেন বলেন, ঈদের কেনাকাটা সাধারণত রোজার আগেই শেষ করে ফেলি। রোজার আগেই আমার পরিবার আত্মীয়-স্বজনের জন্য ঈদের কেনা কাটা কমপ্লিট করে ফেলেছি। আমার সাথে প্রায় ৩-৪ শ লোকের সাথে সর্ম্পকিত । তো তাদের জন্যও কেনাকাটা করেছি আমার সাধ্যমতো।

 

ছোট বেলার ঈদ এবং বর্তমান সময়ের ঈদ উদযাপনের তফাৎ নিয়ে তিনি বলেন, ছোট বেলায় আমাদের ঈদের হৃদয় ছোঁয়া আনন্দ ছিল। একটা দীর্ঘ সময়ের প্রস্তুতি ছিল ঈদ উদযাপন করার জন্য। জামা-কাপড় কিনব, হাতে মেহেদী দিব, নামাজ পড়ব, বড়দের ছালাম করবো এমন দীর্ঘ একটা পরিকল্পনা ছিল।

 

বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন যারা দূরে ছিল তাদের সাথে দেখা হবে। কিন্তু এখন যান্ত্রিক যুগে মেটা লোপ পেতে পেতে ঈদটাও একটা সাধারণ উৎসবে পরিণত হয়ে গেছে। ঈদের যে আবেদন, মিলন এবং মনের যে ছোঁয়া সেটা এখন আর নেই। এখন পারিবারিক বন্ধন  তো নেই ই বরং পারিবারিক বন্ধনের যে সিগ্ধতা, ভাষা সেইটাও নাই। বাজার অর্থনীতির যুগে মানুষ এখন আত্মকেন্দ্রিক ও যান্ত্রিক হয়ে গেছে। আমরা শিশু বয়সে ঈদের সময় এ বাড়ি ওবাড়ি ঘুরে ফিরে বেড়াতাম। এখন ছেলে-মেয়েরা  মোবাইল নিয়ে কম্পিউটার নিয়ে যান্ত্রিকতার মধ্যেই সময় পার করে দেয়। এবং পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।

 

আর এক শ্রেণির লোক আছে যাদের অনেক বিত্ত বৈভব আছে।যা তারা নীতি অনীতির মাধ্যমে রুজি করছে। তারা ঈদে চলে যায় দেশের বাইরে। সেখানে তারা তাদের থাকার যে আনন্দ আছে সেটা পায়। কিন্তু ঈদের যে আনন্দ সেটা তারা উপভোগ করতে পায়।

 

ঈদের সালামি নিয়ে মজার কোন স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, তখন আমরা বড়দের সালাম করতাম। বিশেষ করে বড় ভাইয়েরা ঢাকার শহরে যারা চাকরি করতো তাদের সালাম করতাম অধিক সালামি পাওয়ার আশায়। কে আগে গিয়ে সালাম করবে কে বেশি সালামি পাবে তা নিয়ে প্রতিযোগিতা করতাম। এখন আত্মীয়-স্বজনের, বন্ধু-বান্ধবের ছেলে-মেয়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়া-শুনা করেতো এখন আর এভাবে সালাম করতে চায়না বা করেনা। ঐ কালচারটা মনে হয় এখন তারা পরিবর্তন করে ফেলেছে। ময়-মুরুব্বীদের সালাম করা শুধু একটা সামাজিক রীতি ছিল তেমনটা নয় এটা ধর্মীয় একটা ব্যাপার ছিল।

 

তিনি তার রাজনৈতিক সহকর্মী, আইনজীবী বন্ধু ও শুভানধ্যায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা বর্তমান যুগে কেমন যেন আত্ম-কেন্দ্রিকতার যুগে বসবাস করছি, হৃদয়হীনতার দিকে চলে গেছি । পারস্পারিক সহযোগিতা, সহমর্মিতা লোপ পেয়েছে। সমাজের প্রতি স্তরের মানুষ  এখন কেমন যেন নির্লিপ্ত হয়ে গেছে। আমরা যারা আইন পেশায় জড়িত এবং ব্যবসা বাণিজ্য করে তারা কেমন যেন সব সময় কাজ না করে উপরে উঠতে চায়।

 

অর্থাৎ  বিত্ত বৈভবে, সম্মানে আমরা সব সময় উপরে থাকতে চাই। মূল্যবোধের জায়গাটা আমাদের মধ্য থেকে একেবারেই কমে গেছে। এখন আমার প্রত্যাশা হচ্ছে আমরা যাতে ঈদের আনন্দ ,সুখ-দঃখ যাতে সবাই ভাগাভাগি করতে পারি। বাঙ্গালী সাংস্কৃতির যে  বন্ধন ও অনভূতি আমরা যাতে ফিরিয়ে আনতে পারি সেটিই আমাদের ভাববার বিষয়। নয়তো সমাজ বিভক্তি হয়ে যাচ্ছে, এই যান্ত্রিকতায় সবাইকে আচ্ছন্নকরে ফেলছে এর ফলে দেখা যাবে মানুষের সাথে মানুষের ভেদাভেদ বাড়ছে। এই সময় আমরা যাতে আমাদের বৃহৎ পরিবেশে আমরা যাতে আমাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে পারি এবং সবার সাথে আমদের ভাগাভাগি করে নিতে পারি সবার কাছে আমার এটাই প্রত্যাশা। 
 

এই বিভাগের আরো খবর